প্রায় ৩ বছর পর আসলাম, কেউ নেই আমার সাথে শুধুমাত্র তিনবছর আগেকার পর করা কপোতাক্ষের সেই হৃদয় জুড়ানো ঢেউগুলো আর বিস্তীর্ণ সবুজের সীমারেখা। এই যুদ্ধাহত দেশ ভ্রমণে কারও ইচ্ছে জাগারও কথা না। যদিও আমি অন্যদের মতো মৃত্যু ভয়ে বন্দি জীবন এ বিশ্বাসী নই। এর চেয়েও বড় হল যতটা না আমি আসতে চেয়েছি তার চেয়ে বেশি টেনেছে এই গ্রামের ছোট নদীর যার ঢেউয়ের কলকলানি আমাকে বারবার টানে যশোরের দিকে পা বাড়াতে। সারাদেশ যখন যুদ্ধাহত, বারবার মনে পরছিল নদী পাড়ের জেলে পরিবার গুলোর সেই টানাপোড়ন। দিনশেষে যাদের আধা হাড়ি ভাত ফোটাতে দিনভর নদীতে আর মাঠে কাজ করতে হতো।
আগের মতো নদীতে ঢেউ নেই,কেমন জানি স্তব্ধ হয়ে আছে। নেই সেই সাজানো ফসলের ক্ষেত যার মাঝে তাকিয়ে বেচে থাকার সহস্র স্বপ্ন বুনা যায় নিমিষেই।পায়ে হেঠে একটু এগোতেই চোখে পড়ে একটা পুকুর, অনেকগুলো কচুরিপানা কিন্তু সবগুলোই অগোছালো হয়ত মুক্তিযোদ্ধারা এখানে আত্ত্বগোপন করেছিলো হানাদার বাহীনির আক্রমণে।
গ্রামটা আগের মতো আর জনাকীর্ণ নেই এখন আর সন্ধায় কাজ শেষে সবাই মানিক ফকিরের বাড়িতে গানের আসর বসায় না।চারদিক নিস্তব্ধ যে কজন আছে অচেনা আগের মানুষগুলো নেই ,কোথায় যেন হারিয়ে গেছে হয়ত সান্ধ্য আকাশের শুকতারায়।গান ধরলাম শুন্য প্রান্তরে.....
কোথায় থেকে আসে মানুষ গো মাওলা
কোথায় যায় মিলাইয়া
মাঝখানে ঘর বাধাইলা
অতুল মায়া দিয়া।